উচ্চ বর্ণের হিন্দুদের অত্যাচারের হাত থেকে নিস্কৃতি পেতে কেউ ইসলাম গ্রহন করেনি



ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলাম প্রসারের ইতিহাস  (পর্ব-২০)
 (আগের পর্বটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন)
(প্রথম পর্ব থেকে পড়তে এখানে ক্লিক করুন)


সাম্প্রদায়িক সম্প্রিতির দেশ বাংলাদেশ, হাজার বছরের বাঙালী সংস্কৃতির লীলাভূমি বাংলাদেশ। এ দেশ হিন্দু মুসলমানের নয়। এ দেশ বাঙালীদের দেশ।
মুসলিম পণ্ডিতদের ভাষ্য- ইসলাম শ্রেষ্ঠ ধর্ম, শান্তির ধর্ম এবং একমাত্র বেহেস্ত লাবের অধিকারী।
ভারতবর্ষের সাধারণ হিন্দুরা উচ্চ বর্ণের হিন্দুদের অত্যাচারের হাত থেকে নিস্কৃতি পেতে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় নিয়েছে-- এই হল বেশ কিছু সংখ্যক আধুনিক পণ্ডিত ও রাজনীতিকদের গবেষণা।

ঐতিহাসিক ডক্টর রমেশচন্দ্র মজুমদার অবশ্য ভিন্ন মত পোষণ করে বলেছেন, বাঙালী হিন্দু ও মুসলমানের মধ্যে কোনদিন সম্প্রীতি ছিল না। ইতিহাস ঘেটে অবশ্য দেখা যাচ্ছে, শুধু বাঙালী হিন্দু মুসলমানই নয়, পৃথিবীর কীন সম্প্রদায়ের সঙ্গেই মুসলমানদের সম্প্রতি ছিল না এবং এখনো নেই। সারা পৃথিবীতে জাতিগত সন্ত্রাসের প্রায় সবগুলিই মুসলমান সম্প্রদায় কর্ত্ৃক পরিচালিত। এর কারণ অবশ্য ইসলাম ধর্ম। ইসলাম কাউকে সহ্য করে না। পরমত সহিষ্ণুতা ইসলামের অভিধানে নেই। এটা ইসলামের জন্মগত চরিত্র। একজন হিন্দু যখন প্রার্থন করছেন- সমগ্র বিশ্বের কল্যাণ হোক, মঙ্গল হোক, পৃথিবীর সমস্ত প্রাণী ভয়শূন্য হোক, নিরোগ ও শান্তি লাভ করুক; তখন একজন মুসলমান প্রার্থনা করছে, শুধু মুসলিম উম্মাহর (জাতির) উপর শান্তি বর্ষিত হোক, অন্যান্য জাতি ধ্বংস হোক।

যেখানে একজন মুক্তবুদ্ধি সম্পন্ন লোক মনে করছেন হত্যা, লুণ্ঠন, বিধর্মী অত্যাচার অন্যায়, সেখানে একজন মুসলমানের কাছে ঐ সব অপকর্মগুলি পরম ধরম ও অবশ্য পালনীয় কর্ম। কাফের হত্যা, তাদের সম্পত্তি লুট করা ধর্ম, তাদের বউ, মেয়ে দখল করে ভোগ করা ধর্ম। আক্রমন, আগ্রাসন, অমুসলিম হত্যা করে তাদের সমত্তি লুট করা এবং নারী ও শিশু অপহরন আজকের সভ্যতায় বর্বরতা ব্লে বিবেচিত হলেও মুসলমানের কাছে এই অপকর্মগুলি পরম ধর্ম । বলা বাহুল্য এই সমস্ত উপায়েই পৃথিবীতে মুসলমানের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। 
ইতিহাস না পড়া কিছু স্বঘোষিত পন্ডিত প্রচার করেছেন, ভারত উপ-মহাদেশে মুসলমানের সংখ্যা বৃদ্ধির কারন হিন্দুদের জাতিভেদ প্রথা এবং উচ্চবর্ণ নিন্ম বর্ণ বিরোধ। এর ফলে নিন্মবর্ণের লোকেরা দলে দলে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। কথাটি যে সর্বাংশে মিথ্যা তা ইতিহাস পাঠক মাত্রই জানেন। 
প্রকৃত তথ্য হল -- আক্রমণ, আগ্রাসন, লুণ্ঠন, বন্দী, জিম্মি, জিজিয়া এবং অন্যান্য কৌশলে এদেরকে ইসলামে দীক্ষিত হতে বাধ্য করা হয়েছে। কিন্তু তারা আবার স্বধর্মে ফিরে না আসার কারণ দীর্ঘ দিনের ধারাবাহিক মুসলিম শাসন। 
৬৩২ খৃষ্টাব্দে হজরত মুহাম্মদের মৃত্যুর পর মদিনার লোকেরা স্বধর্মে ফেরত যাচ্ছিলেন, কিন্তু হজরত আবু বকর কঠোর নীতি অবলম্বন করে তাদেরকে ইসলামে থাকতে বাধ্য করে।
ঐতিহাসিক ম্যূর বলেন- "সমগ্র উপদ্বীপের লোক স্বধর্মে ফেরত যাচ্ছিলেন" (এম এ ছালাম; ইসলামের ইতিহাস, পৃষ্ঠা- ১৯)

১৯৭১ সালে বাংলাদেশে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় অনেক হিন্দু মুসলমান হতে বাধ্য হয়েছিলেন, কিন্তু স্বল্পকালীন যুদ্ধ শেষে তারা আবার স্বধর্মে ফিরে এসেছিলেন।

১৯৪৬ সালে নোয়াখলীতে অনেক হিন্দু মুসলমান হতে বাধ্য হয়েছিলেন, কিন্তু রায়ট শেষ হলে তারা আবার স্বধর্মে ফেরত আসেন। কিন্তু ৬০০ থেকে ১৭৫৭ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত যারা মুসলমান হতে বাধ্য হয়েছিলেন তারা আর স্বধর্মে ফিরে আসার সুযোগ পাননি। কারন সহস্র বছর তাদের ঘাড়ের উপর ঝুলছিল রেশমী সুতায় বাধা তলোয়ার। আজ তাদের সন্তানগন ভুলেই গেছে তাদের পূর্ব পুরুষগণ বাধ্য হয়ে ধর্মান্তরিত হয়েছিলেন, মনের তাগিদে হয়নি


এরপর... কাফের-মুসরিক-মুনাফেক-জেহাদ-গনিমতের মাল

No comments

Powered by Blogger.