হয় ইসলাম নয় মৃত্যু


ইসলাম প্রসারের ইতিহাস  (পর্ব-২৩)


এখন দেখা যাক, ইসলামে প্রকৃত পক্ষে এ ধরনের বিধান আছে কিনা, নাকি এলেমা মাওলানেদের খেয়াল খুশী মত ফাতোয়া  ?

বিধর্মীদের যে হত্যা করতে হবে এ সম্পর্কে কোরানের বানী আমরা জেনেছি। সেটি ততকালে প্রয়োগ হয়েছে কি না  তা জানা যাবে হাদিস শরীফ থেকে। 
একটি হাদিসে দেখা যাচ্ছে
"বানু কুরাইজা গোত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আলার নবীকে আমি বলতে শুনেছি যে, 'তাদের মধ্যে বয়োপ্রাপ্তদের হত্যা করা উচিত, কিন্তু যে বয়োপ্রাপ্ত হয়নি তাকে রেহাই দেওয়া উচিত।
আবু আল জুবায়েরকে যিনি এই হাদিস বলেন, তিনি বলেন যে, তিনি তখনো বয়প্রাপ্ত হননি বলে তাকে রেহাই দেওয়া হয়। 
(মজিত খাদ্দুরীম মুসলিম আন্তর্জাতিক আইন, পৃ-৯৪, সারাক্সী মাবসুত, ভলিউম-১০, পৃ-২৭)
অন্যান্য হাদিসেও আছে,-- 
"আল্লার নবী বলেন, -- বয়োপ্রাপ্ত অবিশ্বাসীদের তোমরা হত্যা করতে পার। তবে তাদের যুবক ও শিশুদের অব্যাহতি দাও।"
(, পৃ-৯৫, আবু ইউসুফ, কিতাব-আল খারেজ, প্ৃ-১৯৫) 
(একজন কমন্ডার) খলিফা আবু বকরকে এক পত্র পাঠিয়ে জনতে চান যে, রোমের (বাইজেন্টাইন) যুদ্ধবন্ধীকে মুক্তিপণের বদলে ছেড়ে দেওয়া যাবে কিনা। তিনি উত্তর দেন যে, তাকে মুক্তিপণের বদলে ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়, এমনকি বেশী পরিমাণ সোনার বদলেও নয়। তাকে হয় হত্যা করতে হবে, আর না হয় তাকে মুসলমান হতে হবে। 
(, পৃ-৯৮, সারকসী মাবসুত, ভলিউম-১০, পৃ-২৪)

অনুরূপ কয়েকটি  হাদিস---
১৩২০। (আমি জিজ্ঞাস করলামঃ) মুসলমানরা যদি তাদের আক্রমণ করে তাদের মেয়েগুলোকেও শিশুদের বন্দী করে এবং পুরুষদের যুদ্ধবন্দী করে, তাহলে তাদের সম্পর্কে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া  উচিত হবে ?

১৩২১। তিনি উত্তর দিলেনঃ মেয়েরা ও শিশুরা অমুসলিমদের কাছ থেকে বিনা যুদ্ধে অর্জিত সম্পত্তির মত বিবেচিত হবে এবং তাদেরকে যুদ্ধলব্ধ মাল (গনিমতের মাল) হিসেবে ভাগাভাগি করে নেওয়া যাবে। এর মধ্যে এক পঞ্চমাংশ গ্রহন করা যাবে, পুরষদের ক্ষেত্রে যারা ইসলাম গ্রহন করবে তারা হবে মুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে কিছু করা যাবে না। কিন্তু যারা ইসলাম গ্রহনে অস্বীকৃতি জানাবে তাদেরকে হত্যা করতে হবে। 
(মুসলিম আন্তর্জাতিক আইন, মজীদ খদ্দুরি, পৃ-২৩৮, মবসুত, ভ্লিউম-১০, পৃ-১১৭-১৯)

আর মুহাম্মদের পূর্ববর্তী এক নবী নূহ বলেছিলেনঃ 
"হে আমার খোদা, এই কাফেরদের মধ্য হইতে ভূ-পৃষ্ঠে বসবাসকারী একজনকেও অবশিষ্ট রাখিও না।(কো-৭১/২৬
যদি আপনি তাদেরকে যমীনে অবশিষ্ট রাখেন, তবে তারা আপনার বান্দাদেরকে পথভ্রষ্ট করবে এবং জন্ম দেবে কেবল পাপাচারী ও কাফের। (কো-৭১/২৭)

আজকাল অনেকে বলেন, এসব আইন শুধু আরবদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, কিন্তু তা ঠিক নয়। 
গোলাম মোস্তাফা বলেছেন-- 
"মহানবীর সমস্ত সংগ্রামের মূল প্রেরণা ছিল পৌত্তালিকতার (মূর্তি পূজার) উচ্ছেদ সাধন করিয়া তৌহিদকে জয়যুক্ত করা। এ সংগ্রাম প্রকৃত পক্ষে কোরেশদিগের বিরুদ্ধে নয়, মক্কার বিরুদ্ধেও নয়, ইহুদি খৃষ্টানদিগের বিরুদ্ধেও নয়, জগতজোড়া পৌত্তালিকতার বিরুদ্ধে।
(গোলাম মোস্তাফার "বিশ্ব নবী" পৃ-২৭০)

(পৌত্তালিক বা মূর্তি পূজারীদের মধ্যে হিন্দুরাই বেশি পৌত্তালিক, অন্য কোন ধর্মে এত বেশি মূর্তি পূজা করা হয় না। সুতরাং এটা বলার অপেক্ষা রাখে না ইসলামের জেহাদ বা যুদ্ধ প্রধানত হিন্দুদের বিরুদ্ধে ই)

মহানবী বর্ণিত অপর এক হাদিসে উল্লেখ আছে, 
"আল্লাহ ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই, একথা না বলা পর্যন্ত বিধর্মীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করতে আমাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সুতরাং আল্লাহ ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই- একথা যদি তারা বলে তাহলে তাদের রক্ত ও সম্পত্তির ব্যাপারে তারা নিরাপদ থাকবে। (সহি বুখারী, ভলিউম-২, পৃ-২৩৬)

ইসলামে যুদ্ধকে আইনানুগ করা হয়েছে যুদ্ধের পূর্বে ইসলাম গ্রহণের আহবান জানানোর মধ্য দিয়ে। শত্রুরা যদি ইসলাম গ্রহণে অস্বীকার করে, তাহলে মুসলমানদের জন্য যুদ্ধ ঘোষণা আইনানুগ হবে। (হামিদুল্লাহ, মুসলিম কণ্ডাক্ট অব ষ্টেট, পৃ-১৯০-৯২, খদ্দুরী, ওয়ার এন্ড পীস ইন দি ল অব ইসলাম, পৃ-৯৬-৯৮)

বেশি বেশি শেয়ার করে সবাইকে সচেতন করুন

No comments

Powered by Blogger.