একটি ক্ষমা-ই ভারতীয় হিন্দুদের জন্য কাল হয়ে দাড়ালো
১০২৬
খৃষ্টাব্দে সুলতান মাহমুদ ৩০ হাজার অশ্বারোহী ও অসংখ্য মুসলমান স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে
বিশাল বাহিনী সহ সোমনাথ মন্দিরের সামনে উপস্থিত হলেন। চতুর্দিক থেকে বহু সংখ্যক
রাজপুত যোদ্ধা ও রাজাগন সোমনাথ মন্দির রক্ষার্থে অগ্রসর হলেন। প্রায় পাচ হাজার
হিন্দু সোমনাথ মন্দির রক্ষার্থে প্রাণ বিসর্জন দিলেন , কিন্তু
মন্দির রক্ষা করতে পারলেন না। মন্দিরের পূজারী সহ বহু সংখ্যক ব্রাম্মনকে হত্যা করে
মাহমুদের আদেশে মন্দির অপবিত্র করে মন্দিরের সকল বিগ্রহাদি ভেঙে ফেলা হল। এই
মন্দির হতে দুই কোটি স্বর্ণমুদ্রা
ও বিগ্রহের অলংকারাদি হতে প্রভূত পরিমান স্বর্ণ রৌপ্য মনি মুক্তা তিনি লুণ্ঠন
করলেন।
মন্দির
ও প্রতিমা ধ্বংসের আয়াতটি হল-
"রোজ কেয়ামতের দিন আল্লাহর আদেশে তার ফিরিস্তারা
প্রতিমাপূজক এবং দেব প্রতিমাগুলোকে একত্র করে জাহান্নামে ছুড়ে মারবে।" (কোরান-৩৭/২২-২৩)
সুলতান
মাহামুদের পর মোহাম্মদ ঘোরী ভারত আক্রমন করেন। মোহাম্মদ ঘোরী ভাতিন্দা আক্রমণের পর
স্বদেশ প্রত্যাবর্তন কালে পৃথ্বীরাজ তাকে
ধাওয়া করেন। ধানেশ্বরের নিকট তয়াইন নামক স্থানে উভয় পক্ষে তুমুল যুদ্ধ হল। ঘোরীর
সেনাবাহিনী সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত হল এবং ঘোরী স্বয়ং যুদ্ধে আহত হলেন ও বন্ধী
হলেন।
পৃথ্বীরাজ
হিন্দু অনুশাসান মতে ঘোরীকে ক্ষমা করে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের সুযোগ করে দিলেন। এই
ভারতীয় নীতিই পৃথিরাজের জন্য ও ভারতের হিন্দুদের জন্য কাল হয়ে দাড়াল। হতভাগা
পৃথিরাজ জানতেন না ভারতীয় নীতি আর কোরানের নীতি এক নয়। আর তাই পরের বছর (১১৯২) কোরানের
আদর্শ মতে যুদ্ধের নীতি ভঙ্গ করে ঘোরী পৃথিরাজকে হত্যা করলেন।
এরপর
ঘোরী স্থাপত্য শিল্পের এক অনন্য নিদর্শন আজমীরের হিন্দু মন্দির ধুলিস্যাত করে
সেখানে মসজিদ ও
ইসলাম ধর্মের শিক্ষা কেন্দ্র নির্মাণ করলেন। তারপর হিন্দুর রক্তে রাঙিয়ে তিনি
দিল্লী ও বেনারস অভিযান করেন। অসান দুর্গ দখল করে মুসলমানেরা নির্বিচারে হিন্দু
হত্যা করতে করতে বেনারস পৌছায় এবং সেখানেও হিন্দু হত্যা চালাতে থাকে। ঐতিহাসিক
হাসান নিজাম তার 'তাজ উল মাসির' গ্রন্থে এই বর্বরতা
বর্ণনা করতে গিয়ে লিখেছেন, " তার তরবারির ধার সমস্ত হিন্দুকে নরকের আগুনে
নিক্ষেপ করল। তাদের কাটা মুন্ড দিয়ে আকাশ সমান তিন খানা গম্বুজ নির্মাণ করা হল এবং
মাথাহীন দেহগুলো বন্য পশুর খাদ্যে পরিণত হল।"
এরপর
ঘোরীর উত্তরসূরী কুতুবউদ্দিন এক হাজার ঘোরসওহার বিশিষ্ট বাহিনী নিয়ে কাশীর দিকে
অগ্রসর হল। কাশী নগরী দখল করার পর কুতুবউদ্দিন মুসলমানদের আদেশ দিলেন , সকল
হিন্দু মন্দির ধ্বংস করতে হবে। তারা প্রায় এক হাজার হিন্দু মন্দির ধ্বংস করল এবং
সেই মন্দিরের ভিতের উপর মসজিদ নির্মান করল।
শেয়ার করতে নিচের সোসাল আইকনগুলোতে ক্লিক করুন