কাফের-মুসরিক-মুনাফেক-জেহাদ-গনিমতের মাল

তুই কাফের তুই ঘৃণ্য

ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলাম প্রসারের ইতিহাস  (পর্ব-২১)


 (আগের পর্বটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন)
(প্রথম পর্ব থেকে পড়তে এখানে ক্লিক করুন)


ইসলামের আভির্বাব থেকে আধুনিক যুগ পর্যন্ত সমগ্র মধ্যযুগ ধরে মুসলমানরা সারা বিশ্বে যে তান্ডব করেছে, তার নজির ইতিহাসে দ্বিতীয়টি নেই। ইসলাম-পূর্ব যুগকে ইসলামী চিন্তাবিদ্গন আইয়ামে জাহেলিয়তের যুগ (অন্ধকার যুগ) হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। কিন্তু নানা কারণে আধুনিক মুক্ত নিন্তাবিদগণ ইসলামের আবির্ভাবের দিন থেকেই আইয়ামে জাহেলিয়তের যুগ শুরু হয়েছে বলে চিহ্নিত করেছেন এবং এই সময়টিকে মধ্যযুগ বলে চিহ্নিত করে বর্বরতার যুগ বা মধ্যযুগীয় বর্বরতার নামকরণ করেছেন। আরব, ইরান ও ভারতবর্ষের ইতিহাস পর্যালোচনা করে এ কথা চরম সত্য বলে এক বাক্যে সবাই গণ্য করেন।
ভারত উপমহাদেশে হিন্দু সভ্যতা অধপতনের কোন ধারাবাহিক ইতিহাস নেই। আর এ কারনেই পণ্ডিতগন হিন্দু অধপতনের ও ইসলাম বিস্তারের কারন খুজতে গিয়ে অন্ধকারে হাতড়ে বেড়িয়েছেন। কিন্তু ভুল করেছেন মুসলিম ঐতিহাসিকদের রচিত ইতিহাস না পড়ে। অনেকে সব ই জানেন, কিন্তু সাম্প্রদায়িক হিসেবে চিহ্নিত হবার ভয়ে সত্য প্রকাশ করেন নি। কিন্তু ইতিহাস লিখতে গেলে সত্য ইতিহাসই লেখা উচিত। ইতিহসে জোচ্চুরি চলে না। অথচ আমাদের দেশে তা দিব্যি চলে আসছে। আমাদের উচিত পরবর্তী প্রজন্মের হাতে একটি সত্যিকার ইতিহাস তুলে ধরা।
আচার্য যদুনাথ সরকারের সেই বিখ্যাত কথাটি স্মরণ রেখে--
"সত্য প্রিয়ই হোউক আর অপ্রিয়ই হোউক সাধারণের গৃহীত হউক আর প্রচলিত মতের বিরোধী হউক তাহা ভাবিব না। আমাদের স্বদেশ গৌরবকে আঘাত করুক আর না করুক তাহাতে আক্ষেপ করিব না, সত্য প্রচার করিবার জন্য সমাজের বা বন্ধুবর্গের মধ্যে উপহাস ও গঞ্জনা সহিতে হয় সহিব। কিন্তু তবুও সত্যকে বুঝিব, গ্রহন করিব, ইহাই ঐতিহাসিকের প্রতিজ্ঞা।"

ভারতবর্ষে হিন্দুদের অধপতনের কারণ অনুসন্ধান করতে গেলে একই সঙ্গে ইসলাম বিস্তার এবং সেই সঙ্গে মুসলমানদের ধর্ম এবং আচার সম্পর্কে সাম্যক জ্ঞান থাকা অপরিহার্য। এ কারনেই আলোচনার প্রথমেই পাঠকেদের জানিয়ে দেওয়া দরকার ইদলাম ধর্মের প্রধান ধর্মগ্রন্থ হল কোরান, যা একতি ঐশীগ্রন্থ বলে পরিচিত। কোরানের পরেই হাদিস। হাদিস হল হজরত মুহাম্মদের প্রামাণিক উক্তি ও কর্ম। মুসলমানগণ ও দুটি গ্রহন্থের নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেন হলে দাবি এবং মুসলমান বাদশাহগণ কোরান-হাদিস অনুযায়ী রাজ্য শাসন করেতেন। এ ব্যপারে সহযোগিতা নিতেন ওলেমা ও মাওলানাদের । আমি বোঝার সুবিধার্থে কোরান-হাদিসের বানী এবং তার প্রয়োগ এক সঙ্গে আলোচনা করব যাতে পাঠকগণ বাস্তব অবস্থা ও তাত্ত্বিক ব্যখ্যা বুঝতে কষ্ট বোধ না করেন।

কাফের,মুসরিক
ইসলামে কাফের হল বিধর্মী
আর মুসরিক হল পৌত্তালিক (মূর্তিপুজারী) কাফের।
মুনাফেক
মুনাফেক হল বাইরে ইসলাম ধর্মালম্বী কিন্তু ভিতরে ইসলমের শত্রু।
সপ্তম শতাব্দীতে মদিনার নবী বিরোধী গোষ্ঠীকে এই নাম দিয়ে কোরানে বারবার দিক্কার দেওয়া হয়েছে। এই গোষ্টির নেতা ছিলেন আব্দুল্লা ইবন উবাই।
'জেহাদ'
ইসলামের আর একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যপার হল 'জেহাদ'। কোরানের পরিভাষায় জেহাদ হচ্ছে 'জেহাদ ফি সবিলিল্লা' (আল্লার পথে সংগ্রাম)। বিধর্মী নাশের যুদ্ধই হল জেহাদ। অনেকে বলেন, জেহাদের অর্থ ধর্মযুদ্ধ। এ কথাটা ভুল।
'গণিমা' বা গনিমতের মাল
জেহাদের নিত্যসঙ্গী হচ্ছে 'গণিমা' বা গনিমতের মাল। জেহাদে কাফেরদের কাছ থেকে যে সব মাল কেড়ে আনা হয় তার নাম গনিমতের মাল। 
'জিজিয়া'
হিদাইয়া গ্রহন্থের মতে, জেদ করে যারা কাফেরির পাপে অটল থেকে যায়, তাদের কাছ থেকে ইসলামী রাষ্ট্রের পাওনা আক্কেল সেলামীর নাম জিজিয়া। এই কর অত্যান্ত হীনতার সঙ্গে পৌছে দিতে হয় পবিত্র মুসলমানদের কাছে।
'ফেই'
 এর অর্থ হচ্ছে বিনা যুদ্ধে পাওয়া লুটের মাল, যার সবটাই পয়গম্ব হজরত মুহাম্মদের পাওনা। জিজিয়াকে ফায় এর মধ্যে ধরা হয়।
জিম্মি
ইসলামী রাষ্ট্রের জিম্মায় থাকা জিজিয়া করদাতা কাফেররা হচ্ছে জিম্মি। এরা জেহাদে পরাজিত ইসলামী রাষ্ট্রের অধম নাগরিক।
গাজী
কাফের খুন করে যে মুজাহিদ জয়ী হয় তাকে বলা হয় গাজী। (One who slays an infidel-Hughes) হজরত মুহাম্মদ মদিনা বাশের দশ বছরের মধ্যে ৮২ বার জেহাদ করেছিলেন। তার মধ্যে ২৬/২৭ টিতে নেতৃত দিয়েছিলেন তিনি নিজে। এই সব জেহাদকে বলা হয় গাজোয়াত। অর্থাৎ প্রতিবারই তিনি গাজী হয়েছিলেন। হাদিসে এও দেখা যায় যে, গাজোয়াতগুলির বেশিরভাগই ছিল হানাদারী অর্থাৎ শুত্রুকে নোটিশ না দিয়ে আক্রমন। বৈরাম খার নির্দেশে নিরস্র ও বন্দী হোমরাজ বিক্রমজিত ওরফে হিমুকে হত্যা করে বালক আকবর 'গাজী' হয়েছিলেন।
'জান্নাতুল ফিরদৌস'
এটি ইসলামের সর্বোচ্চ স্বর্গ। যুদ্ধে গিয়ে যারা মারা যাবে তারা শহীদ। এরা যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সরাসরি ঐ সর্বোচ্চ স্বর্গে চলে যাবে। জেহাদ না করা মুসলমান যত ধার্মিকই হোক ঐ স্বর্গে যেতে পারবে না।

এরপর...
মক্কাবাসীরা কি সেচ্ছায় ইসলাম গ্রহন করেছিলো ??

No comments

Powered by Blogger.