নোয়াখালী দাঙ্গা ছিল পরিকল্পিত
নোয়াখালী দাঙ্গা |
ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলাম প্রসারের ইতিহাস (পর্ব-২৫)
গোলাম
সারোয়ার নামে তত্কালীন একজন এম-এল-এ ঐ জেহাদের ডাক দেন। গোলাম সারোয়ারের ডাকের
অনুলিপি পাওয়া যায়নি, কিন্তু জর্জ সিমসন রায়টের যে বিবরণ দিয়েছেন তার এক জায়গায়া
আছে- "জোর করিয়া ব্যপক ভাবে দলে দলে হিন্দুদের ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত
করিবার বিবরণ প্রত্যেক গ্রামেই পাওয়া গিয়েছে। অনেক স্থানে পুরুষেরা আপত্তি করিলে
তাহাদের স্ত্রীদের আটক করিয়া তাহাদেরকে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করিতে বাধ্য করা
হইয়াছে।" (রমেশচন্দ্র মজুমদার, বাংলাদেশের ইতিহাস, ৩য় খন্ড)
তখনকার
কংগ্রেস সভাপতি আচার্য্য যে বি ক্ৃপানলী সে সময় নোয়াখালী ঘুরে যা দেখেছিলেন তা
তিনি প্রকাশ করেছেন এই ভাষায়, "নোয়াখালী এবং ত্রিপুরার জন উন্মত্ততার সব
কিছুই ছিল প্রশিক্ষিত নেতৃত্বের অধীনে ব্যপকভাবে পরিকল্পিত। রাশ্তাঘাট কেটে দেওয়া
হয়েছিল, যত্র তত্র বন্দুকের ব্যবহার হয়েছিল এবং প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত গুণ্ডাদের বাইরে
থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল। হাজার হাজার হিন্দু নারীকে অপহরণ করা হয়েছে অথবা জোর পূর্বক
বিবাহ করা হয়েছে। তাদের পূজার স্থানকে অপবিত্র করা হয়েছে। এমনকি শিশুদের প্রতিও
কোন রকম করুণা দেখানো হয়নি। (অমৃত বাজার পত্রিকা, ২২/১০/১৯৪৬) স্টেটসম্যান
পত্রিকার জনৈক সাংবাদিক নোয়াখালীর দাঙ্গা বিধ্বস্ত অঞ্চলে রিপোর্ট করতে গিয়ে যে
অভিজ্ঞতার সম্মূখীন হয়েছিলেন তা মধ্যযুগীয় মুসলমান শাসন ব্যবস্থা বা ইসলাম
প্রতিষ্ঠাও ততপরবর্তী কালের আরব ইরান ও অন্যান্য অঞ্চলের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।
তিনি স্টেটসম্যান পত্রিকায় তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছিলেন এভাবে-
"নোয়াখালীর
রামগঞ্জ থানার একটি বাচ্চা মেয়ে আমাকে এই ঘটনাটি বলেছিল।
১০
ই অক্টোবর সকালে একদল লোক ঐ মেয়েটির
বাড়িতে এসে মুসলীম লীগের তহবিলে পাচ শ টাকা চাদা চায়। চাদা না দিলে বাড়ির সবাইকে
খুন করা হবে বলে ওরা হমকি দেয়। প্রাণের ভয়ে মেয়েটির বাবা ওদের পাচশ টাকা দেন। এর
কিছুক্ষন পর আবার ওরা আসে, সঙ্গে এক বিরাট জনতা। ঐ বাড়ির জনৈক অভিভাক, যিনি আবার
পেশায় মোক্তার, ঐ উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করতে এগিয়ে যান, কিন্তু তিনি কোন কথা
উচ্চারণ করবার আগেই তার মাথাটা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এরপর
গুণ্ডারা পরিবারেরে সবচেয়ে বয়স্ক লোকটিকে
(মেয়েটির দাদু) খুন করে। এবার মেয়েটির বাবার পালা, মেয়েটির বাবাকে তারাই
সদ্য খুন হওয়া বাবার মৃতদেহের উপর শুইয়ে দেওয়া হল। তখন মেয়েটির ঠাকুরমা তার ছেলেকে
বাচাবার জন্য ছেলের দেহের উপর ঝাপিয়ে পড়েন এবং ওদের কাছে ছেলের প্রাণভিক্ষা চাইতে
থাকেন। কিন্তু তাতে ওরা ক্ষুদ্ধ হয়ে ঐ মহিলার মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করে এবং তার
অচৈতন্য দেয় দূরে ছুড়ে ফেলে দেয়। এবার আবার ওরা মেয়েটির বাবাকে মারতে উদ্যেগী হয়।
মেয়েটি ভয়ে এতক্ষণ ঘরের কোণে লুকিয়ে ছিল। বাবার প্রাণ বাচাবার জন্য সে তখন ঘর থেকে
বেরিয়ে আসে এবং ঐ ঘাতকের হাতে গহনা ও চারশ টাকা দিয়ে তাকে কাকুতি মিনতি করে আর
বাবাকে না মারবার জন্য। ঐ ঘাতক তখন বা হাতে মেয়েটির কাছ থেক গহনাগুলি গ্রহন করে
এবং সঙ্গে সঙ্গেই ডান হাতের দা দিয়ে মেয়েটির বাবার মাথা দেহ থেকে আলাদা করে
ফেলে।"
(দি
স্টেটসম্যান, ২৬/১০/১৯৪৬)
আধুনিক
সাংবাদিক ও প্রতিবেধকগণ এই ধরনের ঘটনাকে গুণ্ডাদের কার্যকলাপ বলে চালিয়ে দিতে চান।
কিন্তু আপনারা প্রথমেই পবিত্র কোরান, হাদিস ও সুন্নার উল্লেখ থেকে দেখেছেন যে
এগুলোর কোনটিই গুণ্ডা বা স্বেচ্ছাচারী বাদশাহদের কর্ম নয়। এর প্রতিটি ঘটনাই ইসলাম
ধর্মসম্মত পবিত্র কাজ।
সমস্ত ইরান ছিল আর্য সভ্যতার লীলাভূমি
পরের পোষ্টের জন্য চোখ রাখুন এই সাইটে এবং পেইজে লাইক দিয়ে রাখুন। শেয়ার করে সবাইকে জানার সুযোগ করে দিন
No comments
Post a Comment