আপনি কি কোরান না পড়েই কোরানের পক্ষে ওকালতি করেন ?



ইসলামের স্বরূপ-০৫



অনেকে বলেন-- 'কুরানে যদি খারাপ কিছু লেখা হয়েও থাকে তবে মনে রাখতে হবে তা লেখা হয়েছিলো চৌদ্দ'শ বছর আগে, সেই সময়ের অনেক ধ্যান-ধারনাই তো আজকের যুগে গ্রহনযোগ্য মনে নাও হতে পারে।'
কিন্তু মনে রাখতে হবে- ইসলাম ধর্ম অনুসারে কোরানের প্রতিটি বানী, প্রতিটি অক্ষর অপরিবর্তনীয়। যিনি মুসলমান হবেন তাকে কোরানের প্রতিটি বানী অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলতে হবে।
সুরা-২ আয়াত-১, সুরা-৬ আয়াত-৩৪, সুরা-৬ আয়াত-১১৫, সুরা-৪ আয়াত-১৫০, সুরা-২ আয়াত-৮৫, সুরা-১০ আয়াত-৬৪, সুরা-১৮ আয়াত-২৭। আপনারা দেখে নিন।

সুতরাং কোরান যত বছর আগেই লেখা হোক না কেন প্রতিটি মুসলমান আজোও জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে কোরানের প্রতিটি বানী মেনে চলেন বা মেনে চলার চেষ্টা করেন।
তা ছড়া মনে রাখতে হবে কোরান শুধু একটা ধর্ম গ্রন্থই নয় পৃথিবীর প্রায় ৫০ টি ইসলামীক দেশের সংবিধানও বটে।
সারা পৃথিবীর ১৩০ কোটি মুসলমান কি ধরনের তত্বে বিশ্বাস করেন তা সকলের জানা প্রয়োজন।
হিন্দুরা খুব কম-ই বেদ গীতা প্রভৃতি ধর্মগ্রন্থ চর্চা করে থাকেন। তাই তারা ভাবেন কোরানে যাই লেখা থাকুক না কেন খুব কম মুসলমানই তা মেনে চলেন। বিশেষত উচ্চ শিক্ষিত কিংবা পাশ্চাত্যবাসী মুসলমানরা বোধহয় একেবারেই কোরান মেনে চলেন না। কিন্তু এই ধারনা সম্পূর্ণ ভূল। প্রতিটি মুসলমান বিশেষত উচ্চ শিক্ষিত মুসলমানরা কোরানের যাবতীয় বানী বিশেষ করে জেহাদের তত্ব অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলেন। এই প্রসঙ্গে উল্ল্যেখ করা যেতে পারে ওসামা বিন লাদেনও একজন উচ্চ শিক্ষিত ইঞ্জিনিয়ার,তার পরিবার খুবি উচ্চ শিক্ষিত এবং বির্ধিষ্ণু, চুড়ান্ত ধনী, কোটিপতি।
ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার আক্রমনের নায়ক মোহাম্মদ আতা ও তার সঙ্গী মুসলমানরা সকলেই উচ্চ শিক্ষিত ও যথেষ্ট সচ্ছল পরিবারের লোক ছিলো।
সুতরাং কেবল দরিদ্র,সর্বহারা বঞ্চিত মুসলমান জনগন-ই পেটের দায়ে জেহাদ বা সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করা কিংবা এই জেহাদ হলো ধনী ও অত্যাচারী শোষোক শ্রেণীর বিরুদ্ধে দরিদ্র নিপিড়িত সর্বহারা জনগনের শ্রেণী সংগ্রাম-- কমিনিউস্টদের এই তত্ব দূলিস্বাত হয়ে যাচ্ছে।
যারা জেহাদের কাজে কোটি কোটি ডলার খরচা করছে তারা আর যাই হোক সর্বহারা তো নয়-ই।

সবচেয়ে আশ্চার্য হলো অনেক হিন্দুকে দেখা যায় কোরানের একটি লাইনও না পড়ে কোরানের মাহাত্ব প্রচার করার জন্য চিৎকার করে গলা ফাটান এবং ইসলামের সমর্থনে অদ্ভুত সব যুক্তির অবতারনা করেন।
কোরান থেকে কোন জেহাদি আয়াতের অবতারনা করলে ঐসব দূর্বুদ্দিজীবীরা বলেন-- একথা কোরানে লেখা আছে ? হতেই পারেনা।
যখন কোরান খুলে দেখানো হয় তখন বলেন প্রকৃত কোরান আরবী ভাষায় লেখা, এই অনুবাদটি টিক অনুবাদ নয়। অথচ এরা নিজেরাও আরবী জানেনা।
তারপর দরুন ৫টা বিভিন্ন কোরানের অনুবাদ খুলে তাকে দেখানো হলো যে এক-ই কথা লেখা আছে তখন শ্রীযুক্ত দূর্বুদ্ধিজিবী বলবেন-- "যেখান সেখান থেকে কোরানের উদ্বৃতি দিলেই তো হবেনা, প্রসঙ্গটা তো দেখতে হবে।"

তখন তাকে বুঝিয়ে বলতে হয় আল্লার বানী নাকি দেবদূত জিবরাইলের মাধ্যমে পয়গম্বর মোহাম্মদের মধ্যে অবতীর্ণ হত। সেই বানীর সংকলন গ্রন্থ-ই হল কোরান। কিন্তু আল্লার বানীগুলো যেটা যার পরে অবতীর্ণ হয়েছিল সেই অবতরনের ক্রমনুসারে কোরানে মোটেই সংকলিত হয়নি।
কোরানের অধ্যায়গুলিকে সুরা বলে । মোট ১১৪টি সুরা আছে। প্রত্যেক সুরায় আছে বিভিন্ন সংখ্যক বানী। যাকে আয়াত বলে। মোট ৬৬৬৬ টি আয়াত আছে। একটা আয়াতের পরবর্তী আয়াতটি কিন্তু তার ঠিক পরেই অবতীর্ণ হয়নী। তা হয়তো আগের আয়াতটির ৫ বছর পরে কিংবা ১০ বছর পরে অবতীর্ণ হয়েছিলো। দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে এই বানীগুলো অবতীর্ণ হয়।
সুতরাং কোরানের আয়াতগুলোর প্রসঙ্গ খুজতে যাওয়া বৃথা।

কিন্তু মনে রাখতে হবে যে প্রসঙ্গেই আয়াতগুলি বলা হোকনা কেন কোরানের প্রতিটি  আয়াত প্রতিটি মুসলমানের কাছে অবশ্যই পালনীয়। 

পরের পর্ব

পরের পর্বের জন্য চোখ রাখুন এই সাইটে এবং পেইজে লাইক দিয়ে রাখুন। শেয়ার করে সবাইকে জানার সুযোগ করে দিন
Powered by Blogger.