এক কোপেই ফেলে দিলো মাথা




"নোয়াখালীর রামগঞ্জ থানার একটি বাচ্চা মেয়ে আমাকে এই ঘটনাটি বলেছিল।
১০ ই অক্টোবর সকালে একদল  লোক ঐ মেয়েটির বাড়িতে এসে মুসলীম লীগের তহবিলে পাচ শ টাকা চাদা চায়। চাদা না দিলে বাড়ির সবাইকে খুন করা হবে বলে ওরা হমকি দেয়। প্রাণের ভয়ে মেয়েটির বাবা ওদের পাচশ টাকা দেন। এর কিছুক্ষন পর আবার ওরা আসে, সঙ্গে এক বিরাট জনতা। ঐ বাড়ির জনৈক অভিভাক, যিনি আবার পেশায় মোক্তার, ঐ উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করতে এগিয়ে যান, কিন্তু তিনি কোন কথা উচ্চারণ করবার আগেই তার মাথাটা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এরপর গুণ্ডারা পরিবারেরে সবচেয়ে বয়স্ক লোকটিকে  (মেয়েটির দাদু) খুন করে। এবার মেয়েটির বাবার পালা, মেয়েটির বাবাকে তারাই সদ্য খুন হওয়া বাবার মৃতদেহের উপর শুইয়ে দেওয়া হল। তখন মেয়েটির ঠাকুরমা তার ছেলেকে বাচাবার জন্য ছেলের দেহের উপর ঝাপিয়ে পড়েন এবং ওদের কাছে ছেলের প্রাণভিক্ষা চাইতে থাকেন। কিন্তু তাতে ওরা ক্ষুদ্ধ হয়ে ঐ মহিলার মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করে এবং তার অচৈতন্য দেয় দূরে ছুড়ে ফেলে দেয়। এবার আবার ওরা মেয়েটির বাবাকে মারতে উদ্যেগী হয়। মেয়েটি ভয়ে এতক্ষণ ঘরের কোণে লুকিয়ে ছিল। বাবার প্রাণ বাচাবার জন্য সে তখন ঘর থেকে বেরিয়ে আসে এবং ঐ ঘাতকের হাতে গহনা ও চারশ টাকা দিয়ে তাকে কাকুতি মিনতি করে আর বাবাকে না মারবার জন্য। ঐ ঘাতক তখন বা হাতে মেয়েটির কাছ থেক গহনাগুলি গ্রহন করে এবং সঙ্গে সঙ্গেই ডান হাতের দা দিয়ে মেয়েটির বাবার মাথা দেহ থেকে আলাদা করে ফেলে।" 
স্টেটসম্যান পত্রিকার এক সাংবাদিক ১৯৪৬ এ নোয়াখালী দাঙ্গা পিড়িত অঞ্চল ঘুরে তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছিলেন এভাবে।


সুত্রঃ 'নোয়াখালী নোয়াখালী' _শান্তনু সিংহ
Powered by Blogger.